এস্ট্রোজেন ডমিনেন্স থেকে বাঁচার উপায়

এস্ট্রোজেন ডমিনেন্স থেকে বাঁচার উপায়

ইস্ট্রোজেন আধিক্য বা "ইস্ট্রোজেন ডমিন্যান্স" থেকে মুক্তি পেতে জীবনযাত্রার পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এই অবস্থায় শরীর থেকে ইস্ট্রোজেন নিষ্কাশন, প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়ানো এবং ইস্ট্রোজেনের প্রভাব কমানো যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার, যেমন - সয়া, তিল, ও তিসি খাওয়া, শারীরিক চাপ কমানো, ব্যায়াম করা এবং হরমোন থেরাপির মতো চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে।

এস্ট্রোজেন ডমিনেন্স থেকে বাঁচার উপায়:

 ১. শুরুতেই অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। কারন, ফ্যাট সেল নিজেরাই একধরনের ব্যাড এস্ট্রোজেন বা E1(এস্ট্রোন) তৈরী করে যা দেহে খারাপ এস্ট্রোজেন লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। যার যত বেশি ওজন তার বডিতে এস্ট্রোজেন ডমিনেন্সের মাত্রাও তত বেশি। তাই সপ্তাহে অন্তত ৪-৫ দিন, ১৬-১৮ ঘন্টা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করার প্রতি জোর দিতে হবে।

 ২. ফ্যাট সেল থেকে এরোমাটেজ নামে একধরনের এনজাইম রিলিজ হয় যা টেস্টোস্টেরনকে ভেংগে এস্ট্রোজেনে রুপান্তরিত করে। এই পয়েন্ট টা ছেলেদের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি হুমকিস্বরুপ।

 ৩. বডিতে ব্যাবহৃত এস্ট্রোজেন বা পরিত্যাক্ত এস্ট্রোজেন সাধারণত লিভার ও গাটের মাধ্যমে দেহ থেকে নির্গত হয়। লিভারে ইনফ্ল্যামেশন থাকলে এই প্রসেস বাধা প্রাপ্ত হয় এবং কন্সিটিপেশন থাকলে পরিত্যাক্ত এস্ট্রোজেন বাহিরে নির্গত হতে পারে না, অত:পর গাট ব্যাকটেরিয়া কতৃক পুনরায় রি-সাইকেল হয়ে বডিতে ফিরে আসে ও এস্ট্রোজেন লেভেল বাড়ায়। তাই লিভার ডিটক্সিফিকেশন ও গাট হেলথ ভালো রাখা জরুরি। 

 ৪. সকল ধরনের কেমিক্যাল, পেস্টিসাইড, জিএমও ফুড, ইন্সট্যান্ট ফুড, চিনি, প্যাকেটজাত এবং ইনফ্ল্যামেশন ঘটায় এই জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। পক্ষান্তরে যথাসম্ভব রাসায়নিকমুক্ত হোল গ্রেইন জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

 ৫. খাদ্য তালিকায় ব্রোকলি, ফুলকপি, বাধাকপি ইত্যাদি ক্রুসিফেরাস জাতীয় খাবার রাখাকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারন, ক্রুসিফেরাস জাতীয় খাবারে I3C and DIM নামক এক প্রকার কম্পাউন্ড থাকে যা লিভারকে গুড এস্ট্রোজেন বা E2(এস্ট্রােডায়োল) মেটাবলিজমে সাহায্য করে এবং ব্যাড এস্ট্রোজেন লেভেল কমাতে সাহায্য করে।

 ৬. সকল ধরনের ক্যামিকেল জাতীয় কসমেটিক প্রোডাক্টস, ত্বক ফর্সাকারি ক্রিম, প্যারাবেন আছে এমন শ্যাম্পু, লোশন, ক্রিম,মেক-আপ ব্যাবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

 ৭. যথাসম্ভব রাত ১০-১১ টার মধ্যে ঘুমাতে যেতে হবে এবং ঘুমানোর সময় অযথা ডিভাইস স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকতে হবে। স্ট্রেস ফ্রি থাকার চেষ্টা করতে হবে। সর্বোপরি হেলদি লাইফস্টাইল মানার প্রতি জোর দিতে হবে।

 ৮. সমস্যার গোড়ায় হাত না দিয়ে শুধু সিম্পটপস ঢাকতে হরমোনাল পিল/বার্থ কন্ট্রোল পিলের অবাধ ব্যাবহার কমাতে হবে।

 ৯. লো-প্রজেস্টেরন সমস্যার সমাধান করতে হবে।(এ বিষয়ে আমাদের পেইজে থাকা পোস্ট পড়ে নিতে পারেন)

 ১০. প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট - বিশেষ করে  গ্লুটাথায়ন, ভিটামিন সি, ই, বি -ভিটামিন, সেলেনিয়াম, প্রো-বায়োটিক, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়ামকে প্রাধান্য দেওয়া যেতে পারে। আপনার ফুড সোর্স লাগবে নাকি সঠিক ডোজে সাপ্লিমেন্টেশন লাগবে সেটা ঠিক করে দেবেন একজন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট। তাই সমস্যা গুরুতর হলে অবশ্যই একজন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট এর পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

 রেগুলার পিরিয়ড, সঠিক সময়ে প্রেগন্যান্সি মেয়েদের জীবনে ব্লেসিং এর চেয়েও বেশি কিছু। আপনার আপতভাবে কিছুটা সমস্যা দেখা দিলে জীবন শেষ, বাঁচার আগ্রহ নেই বলে থেমে যাবেন না। নিজেকে সময় দিন, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করুন এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এই জার্নিতে অনেকেই সফল হয়েছেন, আশা রাখুন আপনিও সফল হবেন ইন শাল্লাহ।।

إرسال تعليق

أحدث أقدم