মুড সুইং মানে হলো আচমকা মনের অবস্থার পরিবর্তন। অর্থাৎ এক মুহূর্তে আনন্দিত থাকা, আবার পরক্ষণেই দুঃখী, রাগান্বিত বা খিটখিটে হয়ে যাওয়া। এটা অস্বাভাবিক নয়, তবে ঘন ঘন হলে বা জীবনে প্রভাব ফেললে তা একটি সমস্যা।
কেন হয়? / কারণ
মুড সুইং-এর পেছনে কয়েকটি শারীরিক ও মানসিক কারণ থাকে—
1. হরমোনের ওঠানামা – বিশেষ করে থাইরয়েড হরমোন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন, টেস্টোস্টেরন।
2. নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্যহীনতা – সেরোটোনিন, ডোপামিন বা নর-অ্যাড্রেনালিনের সমস্যা।
3. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ – স্ট্রেস, ডিপ্রেশন, ট্রমা ইত্যাদি।
4. ঘুমের ঘাটতি – পর্যাপ্ত ও গুণগত ঘুম না হলে।
5. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন – অতিরিক্ত ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, নেশাজাতীয় দ্রব্য, পুষ্টিহীনতা।
6. চিকিৎসাগত কারণ – বাইপোলার ডিসঅর্ডার, পিএমএস/পিএমডিডি, মেনোপজ, কিছু নিউরোলজিক্যাল কন্ডিশন।
করণীয়
1. জীবনযাপন পরিবর্তন – নিয়মিত ঘুম, ব্যায়াম, সুষম খাদ্য।
2. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট – মেডিটেশন, প্রার্থনা, যোগব্যায়াম, গভীর শ্বাস।
3. খাদ্যাভ্যাস – ওমেগা–৩, ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম, পানি।
4. সাপোর্ট সিস্টেম – পরিবার ও বন্ধুদের সাথে খোলামেলা কথা বলা।
5. পেশাদার পরামর্শ – সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তার দেখানো।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
মুড সুইং অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক ওষুধ নির্বাচন হয়। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হলো—
Ignatia amara – দুঃখ, হতাশা, হঠাৎ কান্না বা রাগ হলে।
Sepia – হরমোনাল কারণে মুড পরিবর্তন, বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে।
Pulsatilla – সহজে কেঁদে ফেলা, মানসিকভাবে অস্থির, অন্যের সমবেদনা চাই।
Lachesis – মেনোপজ বা হরমোনাল কারণে অতি সংবেদনশীলতা ও বিরক্তি।
Nux vomica – অতিরিক্ত কাজের চাপ, স্ট্রেস ও খিটখিটে মেজাজ।
Coffea cruda – অতিরিক্ত উত্তেজনা, ঘুম না আসা ও মানসিক অস্থিরতা।
📌 ডোজ ও শক্তি (পোটেন্সি) রোগীর অবস্থা ও স্বভাব অনুযায়ী চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন।