কোন বয়সের মেয়েদের মধ্যে ভিটামিন D এর ঘাটতি (deficiency) সর্বোচ্চ

কোন বয়সের মেয়েদের মধ্যে ভিটামিন D এর ঘাটতি (deficiency) সর্বোচ্চ

কোন বয়সের মেয়েদের মধ্যে ভিটামিন D এর ঘাটতি (deficiency) সর্বোচ্চ—এটি নির্দিষ্ট চিহ্নিত গবেষণাবলী থেকে দেখা যায়:

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গবেষণার তথ্য

1. বাংলাদেশ (কিশোর এবং শিশু)

একটি বাংলাদেশি সম্পাদকীয় গবেষণার (Barisal-এর স্বাস্থ্য-কেন্দ্রে ৫–১৬ বছর বয়সের শিশুদের উপর) অনুযায়ী ভিটামিন D ঘাটতির হার ছিল:

  • ১১–১৬ বছর বয়সে (adolescents): 59.8%
  • ৫–১০ বছরে: 30.3%
  • ৫ বছরের নিচে: 9.9% 

অর্থাৎ, কিশোরগোষ্ঠীতে (১১–১৬ বছর) ঘাটতি সবচেয়ে বেশি।

আরেকটি ঢাকার হাসপাতালভিত্তিক জনসংখ্যায় (Medicine Today, 2019–2024):

সাল-সংক্রান্ত স্পষ্ট বিভাজন না থাকলেও, সার্বিকভাবে ৫৪.২% ভিটামিন D-তে ঘাটতি এবং ৪০% উপ-পর্যাপ্ত (insufficient).

এছাড়াও, ঢাকায় NINMAS-এর ল্যাব-ডেটায় দেখা গেছে প্রায় ৬২.১% জনসংখ্যা ভিটামিন D-তে ঘাটতি (< 20 ng/mL).

2. আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ: শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে (বিশ্বব্যাপী)

একটি শিশু ও কিশোর (০–১৮ বছর বয়স) সংক্রান্ত গবেষণায় (জার্নাল অফ পেডিয়াট্রিক রিসার্চ, তুরস্ক):

ভিটামিন D ঘাটতি (deficiency) অনুসারে:

  • শিশু (infancy): 7.9%
  • প্রি-স্কুল (preschool): 12.1%
  • স্কুল বয়স: 14.6%
  • কিশোর (adolescent): 29.8%

অর্থাৎ কিশোর বয়সে ঘাটতি সর্বাধিক .

PubMed-ভিত্তিক শিশু ও কিশোরদের গবেষণায় দেখা গেছে:

ভিটামিন D-এর ঘাটতি বিশেষ করে কিশোরী মেয়েদের (adolescent girls) মধ্যে খুব বেশি 

3. প্রসব ও প্রেগন্যান্সিতে (বাংলাদেশে)

গ্রামীণ গর্ভবতী মহিলাদের (≤ ২০ সপ্তাহ গর্ভের মধ্যে) উপর একটি গবেষণা অনুযায়ী:

  • 17.3% ভিটামিন D-এ ঘাটতি (deficiency) এবং 
  • 47.2% উপ-পর্যাপ্ত (insufficiency)

বিশেষত সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ছিলেন ছোট বয়সের (< 25 বছর) গর্ভবতী মহিলা .

সুতরাং,

বয়স বা গোষ্ঠী ভিটামিন D ঘাটতির হার (প্রায়)

  • কিশোরী (১১–১৬ বছর, বাংলাদেশ) ≈ 59.8%
  • কিশোর (দুর্লভ বাচ্চা শিশু) ≈ 29.8%
  • গর্ভবতী (< 25 বছর, গ্রামীণ) ≈ 17.3% (plus 47.2% insufficiency)

গবেষণা থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে যে কিশোরী মেয়েদের (প্রায় ১১–১৬ বছরের) মধ্যে ভিটামিন D-এর ঘাটতি সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে Barisal-সংক্রান্ত এক সমীক্ষায় ১১–১৬ বছর বয়সের মেয়েদের মধ্যে ঘাটতির হার ছিল প্রায় 59.8%, যা অন্যান্য বয়স গোষ্ঠীর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি । অন্যান্য আন্তর্জাতিক গবেষণা থেকেও দেখা যায়, কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ঘাটতি তুলনামূলক সর্বোচ্চ ।

ভিটামিন D-এর ঘাটতি কিশোরী মেয়েদের (১১–১৬ বছর) মধ্যে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সৃষ্টি করে, যেগুলো অনেক সময় গুরুত্ব দেয়া হয় না বা ছোট করে দেখা হয়।

কিশোরী মেয়েদের ভিটামিন D ঘাটতির অগ্রাহ্য করা সমস্যাগুলো

1. হাড় ও হাড়ের বৃদ্ধি

🔸হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া (osteopenia, osteoporosis-এর ঝুঁকি আগে থেকেই তৈরি হয়)

🔸হাড়ের ব্যথা, ক্লান্তি, পা ও কোমরে ব্যথা (কিশোরী বয়সে অনেক সময় “বৃদ্ধির ব্যথা” বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়)

🔸হাড় বাঁকা হওয়া বা rickets-like deformity — ছোট ছোট পরিবর্তন, যেমন হাঁটার ধরনে অস্বাভাবিকতা।

2. মাসিক (Menstrual & Hormonal health)

🔸মাসিক অনিয়ম (irregular cycles)

🔸অতিরিক্ত ব্যথা (dysmenorrhea)

🔸PCOS-এর ঝুঁকি বাড়ায় (ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের মাধ্যমে)

অনেক সময় এগুলো শুধু “হরমোন সমস্যা” বলে দেখা হয়, কিন্তু ভিটামিন D ঘাটতি উপেক্ষিত থাকে।

3. ইমিউন সিস্টেম

🔸বারবার ঠান্ডা-জ্বর, ইনফেকশন হওয়া।

🔸শ্বাসনালী সমস্যা (asthma, wheezing এর তীব্রতা বেশি হয়)।

অভিভাবক বা ডাক্তার অনেক সময় কেবল “সিজনাল ফ্লু” বলে গুরুত্ব দেন না।

4. মানসিক স্বাস্থ্য

🔸ডিপ্রেশন, low mood, irritability, মনোযোগ কমে যাওয়া

🔸শেখার ক্ষমতা বা concentration-এর ঘাটতি

এগুলো সাধারণত “কিশোর বয়সের স্বভাব” ভেবে উপেক্ষা করা হয়।

5. শরীরের শক্তি ও পারফরম্যান্স

🔸সার্বক্ষণিক ক্লান্তি, এনার্জি কমে যাওয়া

🔸স্কুল, পড়াশোনা বা খেলাধুলায় পারফরম্যান্সে পতন

এগুলোকে অলসতা বা মোবাইল/পড়াশোনায় অনাগ্রহ হিসেবে ধরা হয়।

6. ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য ঝুঁকি

🔸ভবিষ্যতে অস্টিওপোরোসিস ও হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেশি

🔸প্রেগন্যান্সিতে জটিলতা (ভ্রূণের হাড় দুর্বল হওয়া, লো বার্থ ওয়েট)

কিন্তু কিশোরী বয়সে এর প্রাথমিক ঘাটতিকে সিরিয়াসলি ধরা হয় না।

সারসংক্ষেপ:

কিশোরী মেয়েদের ভিটামিন D ঘাটতি শুধু “হাড়ের সমস্যা” নয়—

এটি হরমোন, মানসিক স্বাস্থ্য, ইমিউন সিস্টেম, পড়াশোনার দক্ষতা, ভবিষ্যৎ মাতৃত্ব—সব জায়গায় প্রভাব ফেলে।

কিন্তু আমাদের সমাজে এগুলোকে সাধারণত “বয়সজনিত সমস্যা”, “হরমোনের খেলা” বা “অলসতা” ভেবে উপেক্ষা করা হয়।

সন্তানদের গায়ে রোদ লাগানোর অভ্যাস করুন অবশ্যই। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা বেশি গুরুত্ব দিন।

إرسال تعليق

أحدث أقدم