১. অন্ধকার বা রাতের ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: ছোটদের মস্তিষ্কে কল্পনাশক্তি তীব্র থাকে। জোর করে অন্ধকার ঘরে রেখে ভয় কাটাতে গেলে ট্রমা হতে পারে।
উদাহরণ: “তুমি অন্ধকার ঘরে ঢুকো, ভয় পেও না”—এরকম বলার চেয়ে প্রথমে ছোট নাইটলাইট জ্বালিয়ে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করানো ভালো।
২. উচ্চতা (উঁচু জায়গা) থেকে ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: হঠাৎ জোর করে উঁচু জায়গায় তুললে আতঙ্ক ও ভার্টিগো তৈরি হতে পারে।
উদাহরণ: শিশু খেলনার স্লাইডে উঠতে ভয় পাচ্ছে, তাকে একেবারে উপরে তুলে দেওয়া ঠিক নয়; বরং নিচ থেকে হাত ধরে ধীরে ধীরে শেখানো উচিত।
৩. পানি/সুইমিং পুলের ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: হঠাৎ পানিতে ফেলে দিলে ডুবে যাওয়ার আতঙ্ক তৈরি হয়, ভবিষ্যতে সাঁতার শেখার আগ্রহ নষ্ট হয়।
উদাহরণ: ধীরে ধীরে পায়ের পাতায় পানি লাগানো থেকে শুরু করা।
৪. ডাক্তার বা ইনজেকশনের ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: জোর করে ধরে ইনজেকশন দিলে শিশু চিকিৎসা-ভীতি পেতে পারে।
উদাহরণ: আগে থেকে খেলনার সিরিঞ্জ দেখানো, ব্যাখ্যা করা—তারপর ডাক্তার দেখানো।
৫. উচ্চ শব্দ (পটকা, থান্ডার, আতশবাজি)
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: হঠাৎ কানফাটা শব্দ শিশুদের জন্য আতঙ্কজনক।
উদাহরণ: উৎসবের আতশবাজি দেখাতে গিয়েই হঠাৎ চালু না করে, দূর থেকে প্রথমে দেখানো।
৬. প্রাণী (কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি) ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: জোর করে আদর করাতে গেলে কামড় বা আঁচড়ের ঝুঁকি থাকে।
উদাহরণ: প্রথমে ছবি বা ভিডিও দেখানো, তারপর দূর থেকে পর্যবেক্ষণ।
৭. নতুন জায়গা বা লোকজনের ভয় (সোশ্যাল অ্যানজাইটি)
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে ঠেলে দিলে শিশু আরও অস্বস্তিতে পড়ে।
উদাহরণ: নতুন স্কুলে ভর্তি করানোর আগে কয়েকদিন আগে থেকে নিয়ে যাওয়া, শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করানো।
৮. উচ্চ আওয়াজে পারফরম্যান্স (মঞ্চে ওঠা, বক্তব্য)
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: জোর করে মাইকে কথা বলালে স্টেজ-ভীতি তৈরি হয়।
উদাহরণ: প্রথমে বাসায় পরিবারের সামনে ছোট ছোট কবিতা বলা।
৯. রক্ত বা আঘাত দেখার ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: হঠাৎ আঘাত বা রক্তের ছবি দেখালে শিশুর মধ্যে শক তৈরি হতে পারে।
উদাহরণ: ধীরে ধীরে সহজ ভাষায় বোঝানো—‘এটা শরীরের অংশ’—তারপর ছবি দেখানো।
১০. বিদ্যুৎ, আগুন, ধারালো জিনিসের ভয়
যেভাবে ভাঙানো ঠিক নয়: এগুলোর ভয় আসলে সুরক্ষার জন্য জরুরি। এই ভয় থাকলে শিশু দূরত্ব বজায় রাখে।
উদাহরণ: গরম চুলা বা সকেটে হাত না দিতে শেখানো—“ভয় পেও না” বলার বদলে “এটা বিপজ্জনক” বলা।