Markup Charge (মার্কআপ চার্জ) A-Z Explained (Bangladesh)

Markup Charge (মার্কআপ চার্জ) A-Z Explained (Bangladesh)

অনলাইন এয়ার টিকিট কিংবা হোটেল বুকিং এ অদৃশ্য ৩%: কীভাবে আপনার বিদেশি কারেন্সি পেমেন্টে অপ্রত্যাশিত খরচ বাড়ছে??

ঘটনাটা শুরু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। আমার বন্ধুর স্পেন ভ্রমণের প্ল্যান। ট্রিপ.ডট কম-এ সস্তা একটা এয়ার টিকেট পেয়ে আনন্দে আটখানা। দাম দেখালো ৬৫০ ইউরো। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গিফট কার্ড কিনে পেমেন্ট করার সময় বাংলাদেশী ব্যাংকের কার্ড দিয়ে গিফট কার্ড কিনলাম। সেইখানে ৬৫০ ইউরোর বদলে স্টেটমেন্ট এ বিল দেখালো ৬৬৯.৫ ইউরো! প্রায় ২০ ইউরো বা ২,৯০০ টাকা বেশি!

প্রথমে ভাবলাম কারেন্সি কনভার্সনের রেট আলাদা হতে পারে। কিন্তু হিসাব করে দেখা গেল, ব্যাংকের কারেন্সি রেটে ৬৫০ ইউরো = প্রায় ৯১,০০০ টাকা। কিন্তু আমাদের চার্জ হয়েছে ৯৩,৯০০ টাকার বেশি!

কী হল?

ব্যাংকে ফোন করে জানা গেল শকিং একটি তথ্য: "স্যার, আমেরিকান ডলার ছাড়া অন্য যেকোনো কারেন্সিতে অনলাইন পেমেন্ট করতে গেলে আমরা ৩% মার্কাপ/হ্যান্ডলিং ফি ধার্য করি। এটা আমাদের নিয়ম।"

অর্থাৎ, আমি ইউরোতে পেমেন্ট করছি, ব্যাংক সেটা প্রথমে ডলারে, তারপর ইউরোতে কনভার্ট করছে। আর সেই কনভার্সনের উপর চার্জ করছে অতিরিক্ত ৩%। এই ৩% কখনোই মূল দামের সাথে দেখায় না। এটি একদম শেষ ধাপে, পেমেন্টের সময় অদৃশ্য ভাবে যোগ হয়।

কী ক্ষতি হচ্ছে?

· ৬৫০ ইউরোর টিকেটে প্রায় ২০ ইউরো বেশি।

· ৫০,০০০ ইয়েনের হোটেল বুকিংয়ে প্রায় ১,৫০০ ইয়েন বেশি।

· ১,০০০ পাউন্ডের প্যাকেজে প্রায় ৩০ পাউন্ড বেশি।

এই "অতিরিক্ত" টাকা আপনি পেমেন্টের আগে ওয়েবসাইটে দেখতে পাবেন না। এটা শুধু ব্যাংকের ফাইনাল ট্রানজেকশনে উঠে আসে।

কেন এমন হয়?

বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাংকের কারেন্সিরিজার্ভ মূলত ইউএস ডলারে। তাই ইউরো, পাউন্ড, ইয়েন, ক্যানাডিয়ান ডলার ইত্যাদিতে পেমেন্ট করলে ব্যাংককে বাড়তি লেনদেন করতে হয়। সেই "ঝামেলা" এর দাম তারা গ্রাহকের কাছেই নেয় ২-৩% হারে, যা ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট রেটের চেয়ে অনেক বেশি।

আপনি কী করতে পারেন?

১. পেমেন্টের আগে জিজ্ঞাসা করুন: বিদেশি কারেন্সিতে পেমেন্টের সময় আপনার ব্যাংকের কারেন্সি কনভার্সন রেট ও অতিরিক্ত ফি কত, তা জেনে নিন।

২. ডলারে দেখানোর অপশন ব্যবহার করুন: ট্রিপ.ডট কম, এজোডা, বুকিং.কম ইত্যাদি সাইটে প্রায়ই "প্রাইস দেখান" অপশনে ইউএস ডলারে দাম দেখার অপশন থাকে। সেটা সিলেক্ট করে পেমেন্ট দিন। তাহলে শুধু ব্যাংকের সাধারণ কারেন্সি কনভার্সন ফি (১-২%) পড়বে, অতিরিক্ত ৩% মার্কাপ পড়বে না।

৩. আন্তর্জাতিক কার্ড/পেমেন্ট গেটওয়ে: কিছু ইন্টারন্যাশনাল প্রিপেইড কার্ড বা পেমেন্ট সিস্টেম (পেপ্যাল, ওয়াইজ ইত্যাদি) সরাসরি স্থানীয় কারেন্সিতে ভাল রেট দিতে পারে।

৪. সচেতনতা ছড়ান: এই লেখাটি শেয়ার করুন। কারণ অনেকেই ভাবেন, "আমার তো কার্ডে টাকা কম কাটছে!" – আসলে কাটছে বেশি, কিন্তু বিলের সময় বোঝা যায়।

শেষ কথা:

আমরা যখন বিদেশে অনলাইন শপিং বা বুকিং করি, তখন দাম তুলনা করে, ডিসকাউন্ট খোঁজে যতটা সাশ্রয়ের চেষ্টা করি, এই অদৃশ্য ৩% সেই সঞ্চয় এক নিমিষে খেয়ে ফেলে। এই চার্জ সম্পর্কে জানা এবং পেমেন্ট পদ্ধতি সচেতনভাবে বাছাই করা – এটাই এখন আমাদের আত্মরক্ষার হাতিয়ার।

#দেখে_শুনে_পেমেন্ট_করুন #অদৃশ্য_চার্জ_সচেতনতা #বাংলাদেশ_ব্যাংক_ফি

পোস্ট টি শেয়ার করে অন্যকে জানাতে সাহায্য করুন। একজনের সচেতনতা অনেকের অর্থ বাঁচাতে পারে।

إرسال تعليق

أحدث أقدم