মাসল লসের কারন ও ক্ষতিকর দিক এবং সমাধান কিভাবে করা যায় ?

ওজন কমাচ্ছেন, মাসল হারাচ্ছেন না তো? ১০ দিনে ৫ কেজি ওজন কমলে খুব খুশী লাগে তাইনা ?  

এতে আপনি সাময়িক মোটিভেট হবেন তবে সেটা আপনার জন্যই ক্ষতিকারক হবে । ছবিতে দেখুন মাসলের ওজন বেশী হয় বলেই দ্রুত ওজন কমানো হলে তখন মাসল লস হয় আর ফ্যাট কমলে ইন্চির সাথে ওজনের একটা ভারসাম্য বজায় থাকবে।    

ওজন কমাচ্ছেন, মাসল হারাচ্ছেন না তো?

মাসল লস (Muscle Loss) কি ?  

মাসল লস মানে শরীরের পেশী টিস্যু ভেঙে যাওয়া বা  কমে যাওয়া ।এটা শুধু শরীরের গঠনকেই প্রভাবিত করে না, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।   

মাসল লসের কারন ও ক্ষতিকর দিক এবং সমাধান কিভাবে করা যায় ? 

মাসল/ পেশী লসের প্রধান কারণসমূহঃ    

1. প্রোটিনের ঘাটতি: শরীরে যথেষ্ট প্রোটিন না পেলে পেশীর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাধাগ্রস্ত হয়.. ফলে মাসল ব্রেকডাউন হয়।

2. অতিরিক্ত ক্যালোরি ডেফিসিট (খুব কম খাওয়া): ওজন কমানোর সময়  অতিরিক্ত কম খেলে শরীর শক্তির উৎস হিসেবে পেশী ভাঙতে শুরু করে।

3. স্ট্রেন্থ ট্রেনিং না করা: শরীর যদি কোনো রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং না পায়,তবে “Use it or lose it” 

নীতিতে পেশী কমে যায়।

4. অতিরিক্ত কার্ডিও: দীর্ঘসময় অতিরিক্ত কার্ডিও করলে শরীর পেশী প্রোটিনকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

5. বয়সজনিত কারণ (Sarcopenia): ৩০ বছর বয়সের পর থেকে স্বাভাবিকভাবে প্রতি দশকে পেশী ভর প্রায় ৩–৮% পর্যন্ত কমে যায়, যদি ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত প্রোটিন না থাকে।

6. ঘুম ও স্ট্রেসের সমস্যা: ঘুমের অভাব ও দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ কর্টিসল হরমোন বাড়ায়, যা পেশী ভাঙতে সাহায্য করে।   

গবেষণায় দেখা গেছে (Nedeltcheva et al., Annals of Internal Medicine, 2010), একই ডায়েট ফলো করেও যারা দিনে মাত্র ৫.৫ ঘণ্টা ঘুমিয়েছে তারা ৮.৫ ঘণ্টা ঘুমানোদের তুলনায় ৫৫% কম ফ্যাট  ও ৬০% বেশি শরীরের টিস্যু/মাসল লস করেছে । সহজভাবে বললে, ঘুম কম হলে শরীর ফ্যাট বার্নের বদলে মাসল লস করে ফলে ওজন কমলেও শরীর দুর্বল ও স্কিন লুজ হয়। 

7. রোগ বা ইনঅ্যাকটিভিটি: দীর্ঘ সময় অসুস্থ থাকা বা বিছানায় থাকা অবস্থায় শরীর কার্যক্রম কমে গেলে দ্রুত মাসল লস হয়।

মাসল লসের ফলে যা ঘটেঃ  

1. বেসাল মেটাবলিক রেট (BMR) কমে যায়:

ফলে শরীর কম ক্যালোরি বার্ন করে, ওজন আবার সহজে বাড়ে।

2. শক্তি ও সহনশক্তি কমে যায়:

দৈনন্দিন কাজ বা ব্যায়ামে দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভূত হয়।

3. শরীরের আকৃতি নরম ও ঝুলে যায়:

পেশীর টোন কমে গিয়ে ফ্যাট বেশি দৃশ্যমান হয়।

4. হাড় দুর্বল হয়ে যায়:

পেশী ও হাড় একে অপরকে সাপোর্ট করে। মাসল কমলে হাড়ের ঘনত্বও হ্রাস পায় (osteopenia/osteoporosis ঝুঁকি)।

5. ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ে:

পেশী হলো গ্লুকোজ ব্যবহারকারি প্রধান টিস্যু। মাসল কমলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ নষ্ট হয়।

6. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়:

কারণ শরীর পর্যাপ্ত অ্যামিনো অ্যাসিড পায় না টিস্যু মেরামত ও প্রতিরোধে।

সমাধান বা প্রতিরোধের উপায়ঃ 

1. প্রতিদিন পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ (১.২–২.০ গ্রাম প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী)

2. নিয়মিত স্ট্রেন্থ ট্রেনিং বা রেজিস্ট্যান্স ব্যায়াম

3. পর্যাপ্ত ঘুম (৭–৮ ঘন্টা)

4. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

5. সঠিক ক্যালোরি ব্যালান্স ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস 

Remember:

“Muscle is your metabolic engine.

Lose it and you lose your strength, shape, and energy.” 

Post a Comment

Previous Post Next Post