আশিক জ্বীনে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ

আশিক জ্বীনে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ

আশিক বা লাভার জ্বিন হচ্ছে সেই সমস্ত জ্বিন যারা পুরুষ ও নারীদের শারীরিক বা মানসিক কিংবা উভয় ভাবে পছন্দ করে নিজের যিনার চাহিদা পূরনের জন্য নারী/পুরুষদের শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে ও কষ্ট দেয়। আরো সহজে বললে রোগীর শরীরে অবস্থান করে জ্বিন নিজে ব্যভিচার তথা যিনায় লিপ্ত হয় এবং ব্যক্তিকে যিনায় লিপ্ত হতে বাধ্য করে।

আপনি যেভাবে বুঝবেন, আপনি আশিক জিন দ্বারা আক্রান্ত কিনা?

১. প্রায় সময় মাথায় অশ্লীল চিন্তা ভাবনা আসা।

২.  কারো সাথে দেখাসাক্ষাৎ ভালো না লাগা।

৩. অতিরিক্ত যৌন উত্তেজনা অনুভব করা। বিশেষ করে বিছানায় ঘুমাতে গেলে।।

৪. অতিরিক্ত আয়না দেখা। বিশেষ করে রাতে এবং নিজেকে খুব সুন্দর লাগা।( অথবা আয়না দেখতে ভয় পাওয়া)

৫. ফিজিক্যাল রিলেশন টাইপের বা শারীরিক সম্পর্কের স্বপ্ন দেখা।(অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হওয়া)

৬. ঘুম থেকে ওঠার পর শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে অনুভব করা। যেমন শরীর ব্যথা করা, বিশেষত গোপনাঙ্গ ব্যথা করা, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।

৭. ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে লাল বা নখের আচরের দাগ দেখতে পাওয়া।

৮. স্বপ্নে নিজের বা অন্যের বিয়ে হতে দেখা।

৯. ছোট ছোট বাচ্চাদের কে স্বপ্ন দেখা।

১০. স্বপ্নে নিজের বা অন্যের বাচ্চা হতে দেখা।

১১. স্বপ্নে বাচ্চা নিয়ে খেলা করতে দেখা।

১২. অতিরিক্ত প্রস্রাব ইনফেকশন হওয়া।

১৩. মেয়েলি সমস্যা দেখা দেওয়া। যেমন অতিরিক্ত সাদা স্রাব যাওয়া, বারবার সিস্ট হওয়া ইত্যাদি। 

১৪. কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা দিন দিন শুকিয়ে যাওয়া। কিংবা স্বাস্থ্য বেড়ে যাওয়া।

১৫. বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বিরক্তি লাগা কিংবা খুব বেশি আকর্ষণ ফিল করা।

১৬. সুইসাইড বা আত্মহত্যা করার ইচ্ছা করা বা কল্পনা আসা।

১৭. ঘুম থেকে ওঠার পর পুরো শরীর ব্যথা লাগা বা ভারী লাগা।

১৮. সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাওয়া, ব্রণ উঠা, অতিরিক্ত চুল পড়া। যাতে তার বিয়ে না হয়, পুরুষের দৃষ্টিতে অসুন্দর লাগে। কেননা আশিক জ্বীন তাকে একা পেতে চায়।

১৯. কোনো কারণ ছাড়া বিবাহ করতে একদম-ই মন না চাওয়া।

২০. বিবাহের কথা শুনলেই ভিতর থেকে কান্না আসা।

২১. সবকিছু ঠিকঠাক হওয়া সত্ত্বেও বারবার বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া।

২২. বিবাহিত হলে মেডিক্যাল সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও বাচ্চা না হওয়া বা বারবার মিসক্যারেজ হওয়া।

২৩. হাজব্যান্ড কাছে আসলে বিরক্ত লাগা।

২৪. স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া এবং শারীরিক সম্পর্ক করতে ইচ্ছে না করা, শারীরিক সম্পর্ক করতে গেলে যৌন শক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া অথবা অতিরিক্ত জ্বালা যন্ত্রণা বা ব্যথা করা।

২৫. বোবায় ধরা, ঘুমের মধ্যে কেউ চেপে ধরে মনে হওয়া।

২৬. অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত ব্যথা।

২৭. স্বপ্নে পছন্দের মানুষ বা মাহরামকে কাছে আসতে দেখা।

২৮. হস্তমৈথুনে/মাস্টারবেশে আসক্ত হয়ে যাওয়া।

(বিবাহিতদের ক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রী থাকার পরেও)

২৯. একা একা কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হওয়া বা ভালো লাগা।

৩০. অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ বা সুঘ্রাণ পাওয়া।

৩১. আশেপাশে কেউ আছে অথবা কেউ আমাকে দেখছে এমন অনুভব করা।

৩২. শত চেষ্টা করেও গোপন গুনাহ থেকে বাঁচাতে না পারা।

৩৩. নিজের অথবা বাবার ও হাসবেন্ডের সংসারে অশান্তি ও অভাব অনটন লেগে থাক।

ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা আছে, তবে এখানে উল্লেখিত দুই একটি সমস্যা মাঝেমধ্যে কোন ব্যক্তির ভিতরে প্রকাশ পাওয়া স্বাভাবিক কিন্তু রেগুলার কয়েকটি সমস্যা চলতে থাকা অবশ্যই অবশ্যই আশিক জ্বীন তথা দুষ্টু জ্বীন শয়তানের লক্ষণ।

এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে সমস্ত প্রকার গুনাহ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে, যদিও এটা আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খুবই কষ্টকর। তারপর সমস্ত ফরজ সুন্নাহ ওয়াজিব ইবাদতের পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যার আমল ঠিকমতো আদায় করতে হবে। 

যাদের পক্ষে কন্টিনিউ সমস্ত ইবাদত বন্দেগী করা সম্ভব নয়  অথবা ইবাদত বন্দেগী করার পরেও এমন সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে, তাদের জন্য জরুরী অভিজ্ঞ কোন রাক্বির থেকে রুক্বইয়্যাহ চিকিৎসা গ্রহণ করা।

জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হওয়া বা “আশেক জ্বিন” নিয়ে উদ্বেগ অনেকেরই থাকে। এটি সাধারণত শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে যুক্ত কিছু লক্ষণ দেখালে মানুষের মধ্যে সন্দেহ জন্মায়। তবে যেকোনো ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা জরুরি। জ্বিন বা অতিপ্রাকৃতিক ধারণার প্রভাবে যে মানসিক বা শারীরিক প্রভাব পড়ে, তা প্রায়শই সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায় না। সঠিক রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।যদি আপনার সাথে এই লক্ষণগুলো মিলে যায় তাহলে কুফুরী শিরকি তাবিজ তদবির বাদ দিয়ে আপনি রুকিয়া করান, ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post