অনেক বাংলাদেশি নাগরিক বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকেট নিয়েও ইমিগ্রেশন থেকে অফলোডের শিকার হন। অথচ কোনো লিখিত কারণ বা সুনির্দিষ্ট আইনি ভিত্তি ছাড়া অফলোড করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন।
কেন এটি বেআইনি?
- বাংলাদেশ সংবিধানের Article 36 অনুযায়ী – প্রত্যেক নাগরিকের বিদেশ ভ্রমণের অধিকার আছে।
- Article 31 ও 32 – প্রত্যেকের আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষা পাবে।
- বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও অফলোড করা হলে এটি সরাসরি Fundamental Rights Violation।
আইন কী বলে?
🔹 দণ্ডবিধি ধারা 166 → কোনো সরকারি কর্মচারী ইচ্ছাকৃতভাবে আইন অমান্য করলে, এবং তাতে নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে, সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে।
🔹 দণ্ডবিধি ধারা 220 → বেআইনিভাবে আটকানো বা ভ্রমণ বাধা দিলে, সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড + জরিমানা হতে পারে।
🔹 সংবিধানের Article 102 → নাগরিকরা সরাসরি High Court Division-এ রিট মামলা করতে পারেন। এর মাধ্যমে বেআইনি অফলোডকে অবৈধ ঘোষণা করা যায় এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করা যায়।
নাগরিকের করণীয় (Step by Step)
1️⃣ প্রমাণ সংগ্রহ করুন – বোর্ডিং পাস, টিকেট, ভিসা, পাসপোর্টের কপি, দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নাম, ডিউটি শিফট, এবং সম্ভব হলে সাক্ষীর তথ্য নিন।
2️⃣ অভিযোগ করুন –
ইমিগ্রেশন শিফট ইনচার্জ বা ডিউটি অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দিন।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ সেলে লিখিত আবেদন করুন।
3️⃣ ফৌজদারি মামলা করুন –
ধারা 166 ও 220 অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করা যায়।
4️⃣ হাইকোর্টে রিট করুন –
Article 102 অনুযায়ী Mandamus (বেআইনি কার্যক্রম বন্ধ), Certiorari (সিদ্ধান্ত বাতিল), Compensation (ক্ষতিপূরণ) দাবি করা যায়।
5️⃣ মানবাধিকার সংগঠন ও মিডিয়ার সহায়তা নিন –
যেমন ASK, BLAST, HRPB ইত্যাদি। এতে জনমত সৃষ্টি হবে এবং প্রশাসনের জবাবদিহি বাড়বে।
বাস্তবে কী দাবি করা যায়?
✔️ বেআইনি অফলোডকে অবৈধ ঘোষণা করা।
✔️ ভবিষ্যতে এ ধরনের হয়রানি বন্ধে নীতিমালা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
✔️ ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা।
আমাদের দাবি
আমরা চাই –
🔸 ইমিগ্রেশনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি
🔸 নাগরিক অধিকার রক্ষা
🔸 বেআইনি হয়রানির অবসান
কারণ, ইমিগ্রেশন আমাদের জন্য নিরাপত্তা, কিন্তু তা যেন কখনো হয়রানির জায়গা না হয়।