অনেকেই প্রশ্ন করেন – আমার ফ্রেশ পাসপোর্ট! জীবনে প্রথমবার বিদেশ ঘুরতে যাবো, ইমিগ্রেশনে কি কি প্রশ্ন করতে পারে বা কি ডকুমেন্টস চাইতে পারে? যদি ঠিকভাবে দেখাইতে না পারি তাহলে কি হবে?
চলেন আজ একটু বিস্তারিত বলি
আপনি যখন প্রথমবার বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে কোনো দেশে ভ্রমণে যাবেন, তখন প্রথম ঝামেলা শুরু হতে পারে বোর্ডিং পাস দেওয়ার সময় থেকেই।
বোর্ডিং এজেন্ট যখন দেখবে আপনার পাসপোর্ট ফ্রেশ, তখন সে নরমালি কিছু প্রশ্ন করবে!
– ভিসা আছে কিনা
– কোথায় যাচ্ছেন
– কী করেন
– রিটার্ন টিকিট
– হোটেল বুকিং
এর সব কিছুর সঠিক উত্তর দিতে পারলে, তারা বোর্ডিং পাস দিয়ে দিবে।
এরপর আপনি যাবেন ইমিগ্রেশন কাউন্টারে। এখানেই মূল প্রশ্নের শুরু। ইমিগ্রেশন অফিসার সাধারণত কিছু প্রশ্ন করে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য, প্রস্তুতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে। নিচে কিছু প্রশ্ন শেয়ার করতেছি যেগুলা সাধারণত করা হয়:
ইমিগ্রেশন অফিসার কী কী জিজ্ঞেস করতে পারে:
১. কোথায় যাচ্ছেন?
২. কেন যাচ্ছেন – ঘুরতে, ট্রিটমেন্ট, কাজ নাকি অন্য কিছু?
৩. আগে কোথাও গেছেন কিনা?
৪. কে কে যাচ্ছে – আপনি একা না পরিবার/ফ্রেন্ড নিয়ে?
৫. কয়দিন থাকবেন?
৬. হোটেল বুকিং করেছেন কিনা?
৭. রিটার্ন টিকিট আছে তো?
৮. সাথে কারেন্সি আছে কিনা? কার্ড বা ক্যাশ ডলার?
৯. ভিসা কোথা থেকে নিয়েছেন এবং সেটা ভেরিফাই করবে
১০. আপনি কী করেন – চাকরি হলে অফিস আইডি বা NOC, ব্যবসা হলে ট্রেড লাইসেন্স, স্টুডেন্ট হলে স্টুডেন্ট আইডি বা প্রমাণ
১১. অনেক সময় মোবাইল ব্যাংক অ্যাপে ব্যালেন্স দেখতে চায়, এমনকি ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা SMS পর্যন্ত
কিছু কিছু অফিসার আবার ট্রিকি প্রশ্নও করে দিতে পারে!
– আগে কেন বিদেশ যাননি?
– এই দেশেই কেন যাচ্ছেন?
– এই জায়গার কোনো অ্যাড্রেস জানেন?
– হোটেল কবে বুক করছেন, দেখান!
– কার্ডটা কোথা থেকে হয়েছে, এটা আপনার নামেই তো?
এইসব প্রশ্নের উত্তর যদি আপনি কনফিডেন্সের সাথে দিতে পারেন আর ডকুমেন্টস ঠিকঠাক থাকে, তাহলে ইনশাআল্লাহ কোনো সমস্যা হবে না।
❗ যদি উত্তর দিতে না পারেন, বা কিছু ডকুমেন্ট না থাকে, বা আপনার কথায় সন্দেহ হয় – তাহলে তারা আপনাকে অফলোড (ভ্রমণে যেতে না দেওয়া) করে দিতে পারে!
📌 কি কি ডকুমেন্টস সাথে রাখা ভালো:
১. ভ্যালিড পাসপোর্ট
২. ভিসা (যদি দরকার হয়)
৩. রিটার্ন ফ্লাইট টিকিট
৪. হোটেল বুকিং (বিশেষ করে প্রথমবার গেলে)
৫. কমপক্ষে ১ হাজার ডলার ক্যাশ বা কার্ডে টাকা
৬. ডুয়েল কারেন্সি কার্ড (যদি ক্যাশ না নেন)
৭. পেশাগত পরিচয় – চাকরি হলে NOC/ID, ব্যবসা হলে ট্রেড লাইসেন্স
৮. ব্যাংক স্টেটমেন্ট (না থাকলেও চলে, কিন্তু থাকলে ভালো)
৯. ট্রাভেল আইটিনারারি (মানে কোথায়, কবে যাবেন, কোথায় থাকবেন)
১০. অতিরিক্ত যেকোনো ব্যাক্তিগত ডকুমেন্ট যা আপনার কথা প্রমাণ করে
একটা কথা মনে রাখবেন:
ইমিগ্রেশন হলো নিরাপত্তা যাচাইয়ের জায়গা। আপনি যদি ডকুমেন্টস ঠিক রাখেন আর আতঙ্কিত না হয়ে, আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলেন – তাহলে কোনো ইমিগ্রেশন আপনাকে আটকাবে না ইনশাআল্লাহ।
তবে হ্যাঁ, ইমিগ্রেশন অফিসার মানুষভেদে আলাদা – কারো কারো মন-মেজাজ ভালো, আবার কেউ কেউ সন্দেহপ্রবণ। তাই সাবধান থাকা উত্তম!