হঠাৎ ভুলে যাওয়া সমস্যা ‘ব্রেন ফগ’ - মুক্তি মিলবে যেভাবে

 হঠাৎ ভুলে যাওয়া সমস্যা ‘ব্রেন ফগ’ - মুক্তি মিলবে যেভাবে

ব্রেন ফগ কী?

ব্রেন ফগ কোনো একক রোগ নয়, বরং মনোযোগ কমে যাওয়া, হঠাৎ ভুলে যাওয়া, ভাবনায় ধীরগতি, মাথা ভার লাগা বা মস্তিষ্কে “মেঘলা” ভাবের মতো উপসর্গের সমষ্টি।

প্রধান কারণ

ঘুমের ঘাটতি – দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মেমরি ও চিন্তাশক্তি দুর্বল হয়।

স্ট্রেস/ডিপ্রেশন – কর্টিসল হরমোন বেড়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে।

অসুস্থতা বা ওষুধ – যেমন কোভিড-পরবর্তী অবস্থা, কেমোথেরাপি, অ্যান্টিহিস্টামিন ইত্যাদি।

পরিবেশ ও খাদ্যাভ্যাস – পানিশূন্যতা, অস্বাস্থ্যকর খাবার, প্রসেসড ফুড।

পুষ্টি/হরমোন ঘাটতি – ভিটামিন বি১২, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি।

মুক্তির উপায়

পর্যাপ্ত ঘুম (৭–৯ ঘণ্টা) – প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো-জাগা, শোবার আগে স্ক্রিন এড়ানো।

এরোবিক ব্যায়াম – হাঁটা/সাইক্লিং/দৌড়; সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট।

পর্যাপ্ত পানি পান – সামান্য পানিশূন্যতাও মনোযোগ কমিয়ে দেয়।

স্বাস্থ্যকর খাদ্য – শাকসবজি, ফল, মাছ, বাদাম ও অলিভ অয়েল; প্রসেসড খাবার কমানো।

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ – ধ্যান, শ্বাস-প্রশ্বাস অনুশীলন, কাজের মাঝে বিরতি।

রুটিন মেনে চলা – নোট নেওয়া, ক্যালেন্ডার অ্যাপ ব্যবহার, টু-ডু লিস্ট করা।

কখন ডাক্তার দেখাবেন

আচরণ/কথাবার্তায় পরিবর্তন, বারবার মাথাব্যথা, স্নায়বিক সমস্যা বা অসাড়তা দেখা দিলে

হঠাৎ মেমরি লসের সঙ্গে অন্য শারীরিক সমস্যা যোগ হলে

উপসর্গ ৪–৬ সপ্তাহেও না কমলে বা দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হলে

বারবার অস্বাভাবিক  আচরণ/ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন, এক্সপ্রেসিভ ভাষা-সমস্যা, অসাড়তা/দৃষ্টিবিভ্রাট ইত্যাদির মতো সতর্ক সংকেত দেখা দিলে

থাইরয়েড, বি১২, ডায়াবেটিস, ঘুমের সমস্যা (যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া) সন্দেহ থাকলে স্ক্রিনিং দরকার—এগুলো চিকিৎসাযোগ্য কারণ।

৭-দিনের ছোট প্ল্যান (শুরু করার জন্য)

ঘুম: একই সময়ে শোয়া-ওঠা; ক্যাফেইন দুপুর ২টার পর না; শোয়ার ১ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন অফ।

ব্যায়াম: প্রতিদিন ৩০ মিনিট brisk walk/সাইক্লিং (না পারলে ৩×১০ মিনিট)।

খাদ্য: প্রতিদিন ৫ সার্ভিং শাক-সবজি/ফল, সপ্তাহে ২ বার মাছ, অলিভ-অয়েল/বাদাম।

পানি: সকাল-দুপুর-বিকেলে এক গ্লাস করে বেসলাইন; গরমে/ব্যায়ামে বাড়ান।

ব্রেন ফগ মূলত ঘুম, স্ট্রেস, পানি, খাদ্য ও শারীরিক অনিয়মের কারণে হয়। জীবনযাত্রা ঠিক রাখলে সাধারণত নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী বা জটিল হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Post a Comment

Previous Post Next Post