ব্লাড মুন বা চন্দ্রগ্রহণে মুসলমানদের করণীয় (ইসলাম কি বলে )

ব্লাড মুন বা চন্দ্রগ্রহণে মুসলমানদের করণীয় (ইসলাম  কি বলে )

“Blood Moon” শব্দটা মূলত বৈজ্ঞানিক দিক থেকে ব্যবহৃত হয়। চন্দ্রগ্রহণে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়লে চাঁদ লালচে হয়ে যায়, তাই একে Blood Moon বলা হয়। কিন্তু ইসলামে এর কোনো বিশেষ রহস্য বা অশুভ অর্থ নেই—এটা কেবল আল্লাহর কুদরতের একটি নিদর্শন।

📌চন্দ্রগ্রহণ কোনো অশুভ বা কুসংস্কার নয়। এটি আল্লাহর এক নিদর্শন।

📌রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:

“সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের দুটি নিদর্শন। এগুলো কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে গ্রাসপ্রাপ্ত হয় না। বরং আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখানোর জন্য এগুলো ঘটান।” (বুখারি, মুসলিম)

ইতিহাস ও অভিজ্ঞতা বলে, চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ, আমাবস্যা বা বিশেষ রাত-দিনগুলোকে কেন্দ্র করে সমাজে নানা কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে।একইভাবে এই সময়গুলোকে ঘিরে জ্বীন ও যাদুবিদ্যার কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়।

কেউ তাদের পুরনো যাদু রিনিউ করে,

কেউ নতুনভাবে যাদুচর্চায় তৎপর হয়,

আবার কেউ শয়তানকে খুশি করতে বলিদান দিয়ে থাকে।

জেনে রাখা দরকার, ইহুদী ও বহু যাদুকররা এই রাতকে উৎসব হিসেবে পালন করে।ফলে অনেক রোগী বা পেশেন্ট এই সময়গুলোতে বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হয়।

করণীয়

এ অবস্থায় আমাদের করণীয় হলো

  1. নিজে নিজে সেল্ফ রুকইয়াহ করা।
  2. বড়ই পাতার পানি দিয়ে গোসল করা।
  3. রুকইয়াহর পড়া পানি পান করা।
  4. ব্যথার স্থানে অলিভ অয়েল (যয়তুন তেল) মেসাজ করা।
  5. আজুয়া খেজুর খাওয়া।
  6. রুকইয়াহর পানি বাড়ির চারপাশে স্প্রে করা।
  7. উচ্চস্বরে সূরা বাকারাহ তিলাওয়াত করা।
  8. উচ্চস্বরে আজান দেওয়া।
  9. প্রয়োজনে অভিজ্ঞ রাকির পরামর্শ নেওয়া।
  10. অধিক ইস্তিগফার ও দু‘আর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সুরক্ষা প্রার্থনা করা।
  11. সালাতুল কুসুফ (চন্দ্রগ্রহণের নামাজ) আদায় করা।
  12. মনকে সাহসী রাখা এবং ভয় না পাওয়া।
  13. কুসুফ/খুসুফ নামাজ পড়া (২ রাকাত, লম্বা কিয়াম, রুকু ও সিজদা সহকারে)।
  14. দোয়া, ইস্তিগফার ও জিকির বেশি বেশি করা।
  15. সদকা-খয়রাত করা।
  16. আল্লাহর কুদরতের কথা স্মরণ করা ও ভয় করা।

 যা করণীয় নয়:

 • কুসংস্কার, ভয় বা অশুভ লক্ষণ মনে করা।

 • অযথা ভয় পেয়ে অকারণে মানুষকে আতঙ্কিত করা।

সহীহ হাদিস থেকে শিক্ষা

আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন

حَدَّثَنَا شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ، يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ ‏"‏ إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ مِنَ النَّاسِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَقُومُوا فَصَلُّوا ‏"‏

“সূর্য ও চন্দ্র কারো মৃত্যুর কারণে গ্রহণ করে না।বরং এগুলো আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন।সুতরাং তোমরা যখন এগুলো দেখতে পাও, তখন দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করো।”

(সহীহ বুখারী)

সহজভাবে বলা যায়, চন্দ্রগ্রহণ হলো আল্লাহর এক মহাশক্তির নিদর্শন, এ সময় আমাদের উচিত নামাজও দোয়া ও তওবা দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া।

লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারেন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post