Late Payment Charge:
১। আপনি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে শপিং করার পরে মিনিমাম ডিউ বিল আসলো ১০,০০০.১০ (দশ হাজার টাকা দশ পয়সা) টাকা।
আপনার কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায়, কিংবা সঠিক সময়ে বিল দিতে মনে না থাকায় আপনি সেই মাসে বিল দিলেন না। তাহলে পরের মাসে এই বিলের সাথে লেইট পেমেন্ট চার্জ আসবে এবং ব্যাংকে আপনার ঋণ ইতিহাস (CIB) রিপোর্ট খারাপ হবে। এই লেইট পেমেন্ট চার্জ ব্যাংক ভেদে এবং কার্ডের ক্যাটাগরি ভেদে ৫০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
২। ১০,০০০.১০ (দশ হাজার টাকা দশ পয়সা) টাকা মিনিমাম ডিউ বিল জেনারেট হবার পরে আপনি ১০,০০০ টাকা বিল পরিশোধ করে দিলেন ঠিকই, কিন্তু সেই অবশিষ্ট ১০ পয়সা বিল দিতে আপনার মনে ছিলো না। তাই সামান্য এই ১০ পয়সা বিল অনাদায়ী থাকার জন্যে পরের মাসে আপনার বিলের উপরে ভালো রকমের সুদ আসবে।
BDT এবং USD বিলের ক্ষেত্রে লেইট পেমেন্ট চার্জ আলাদা আলাদা আসে। সাময়িক আর্থিক অসক্ষমতার জন্যে ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট বিল পরিশোধ করতে না পারলে, অন্তত মিনিমাম ডিউ বিল প্রতিমাসে সময়মতো পুরোপুরি পরিশোধ করে দিবেন।
অধিকতর সতর্কতার জন্যে মিনিমাম BDT ডিউ বিলের চেয়ে অন্তত ১০ টাকা বেশি বিল সবসময়ই পরিশোধ করে দিবেন এবং USD বিলের ক্ষেত্রে সবসময় ১ ডলার বিল বেশি পরিশোধ করে দিবেন। তাহলে বিলের সাথে থাকা পয়সা বিলের পরিমাণ আর অনাদায়ী থাকবে না।
BEFTN কিংবা বিকাশ দিয়ে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করার শেষ তারিখের পূর্বে অন্তত ৩ কর্মদিবস সময় হাতে রেখে সবসময় বিল পরিশোধ করে দিবেন, শেষ দিনে ক্রেডিট কার্ডের বিল কখনোই দিবেন না।
Over Limit Charge:
ধরুন আপনার ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট ক্রেডিট লিমিট ১ লাখ টাকা। আপনি কার্ড দিয়ে ১ লাখ টাকার শপিং করে ফেললেন। তাহলে পরের মাসে ১ লাখ টাকার বিলের সাথে যদি কার্ডের পূর্বের কিছু সুদ, কিংবা ইন্স্যুরেন্স চার্জ, কিংবা কার্ডের মেসেজ এলার্ট চার্জ, কিংবা কার্ডের বাৎসরিক চার্জ আরোপিত হয়ে কার্ডের সর্বমোট বিলের পরিমাণ যদি সর্বমোট ক্রেডিট লিমিটের চেয়ে ০১ পয়সাও বেশি হয়ে যায়, তাহলে ওভার লিমিট চার্জ আরোপিত হবে। এই চার্জের পরিমাণ ব্যাংক ভেদে এবং কার্ডের ক্যাটাগরি ভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তাই ক্রেডিট কার্ডের ফুল লিমিট কখনো খরচ করে ফেললেও বিল জেনারেট হবার আরো অনেক পূর্বেই কিছু টাকা কার্ডে অগ্রিম পরিশোধ করে দিবেন, যেন কার্ডের বিলে ওভার লিমিট চার্জ আরোপিত হতে না পারে।
বিশেষ করে কার্ডের বর্ষপূর্তির মাসে খুবই সতর্ক থাকুন, যেন কার্ডের বাৎসরিক চার্জ আরোপিত হওয়ার কারণে সর্বমোট বিল যেন কার্ডের সর্বমোট ক্রেডিট লিমিটকে কখনো ছাড়িয়ে না যায়। কারণ অনেক ব্যাংকেরই কার্ডের বর্ষপূর্তিতে কার্ডের বাৎসরিক চার্জ আরোপিত হয়, পরবর্তীতে হেল্পলাইনে কল দিয়ে কার্ডের বাৎসরিক চার্জ ওয়েভের জন্যে ম্যানুয়ালি রিকুয়েষ্ট সাবমিট করতে হয়। এভাবে কার্ডের বাৎসরিক চার্জ আরোপিত হওয়ার কারণেও কিন্তু কার্ডে ওভার লিমিট চার্জ আরোপিত হয়ে যেতে পারে, তাই এই ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন।
Higher Credit Limit Maintenance Fee:
ধরুন আপনার ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট ক্রেডিট লিমিট ১ লাখ টাকা। আপনি এই মাসে কার্ড দিয়ে ১০,০০০ টাকার শপিং করলেন। পরের মাসে সর্বমোট বিল জেনারেট হলো ১০,০০০ টাকা। আপনি কার্ডে পেমেন্ট করে দিলেন ১৫,০০০ টাকা। আপনি কিন্তু এখানে ৫,০০০ টাকা অতিরিক্ত পেমেন্ট করে দিলেন।
এতে আপনার ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট ব্যালেন্স হয়ে গেল ১,০৫,০০০ টাকা। অথচ আপনার কার্ডের সর্বমোট ক্রেডিট লিমিট কিন্তু ১,০০,০০০ টাকা থাকার কথা।
EBL এবং ব্র্যাক ব্যাংকসহ আরো কিছু ব্যাংক তাদের ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট লিমিটের নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি ব্যালেন্স রাখার জন্যে পরবর্তী মাসে ১,০০০ টাকা জরিমানা চার্জ আরোপিত করে থাকে।
তাই আপনার ব্যবহার করা ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে এরকম চার্জ আরোপিত হয়ে থাকে কিনা, কিংবা সর্বমোট ক্রেডিট লিমিটের চেয়ে কি পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা ক্রেডিট কার্ডে রাখা পর্যন্ত এই চার্জ আসবে না, তা ব্যাংকের হেল্পলাইনে ফোন করে আগেই ভালো করে জেনে নিবেন।
বিশেষ পরামর্শঃ
ক্রেডিট কার্ডের শিডিউল অব চার্জেস ও টার্মস এন্ড কন্ডিশনস সময়ে সময়ে নিয়মিত পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই আপনার ব্যবহার করা ক্রেডিট কার্ডের সর্বশেষ SOC এবং T&C সম্পর্কে আপডেটেড থাকার ব্যাপারে আপনার ফোনে আগত ব্যাংকের মেসেজ এবং ব্যাংকের ওয়েবসাইট ঘেঁটে আপডেটেড থাকতে সবসময়ই সচেষ্ট থাকুন।
এসমস্ত বিভিন্ন কারণে আপনার ঋণ ইতিহাস (CIB) রিপোর্ট খারাপ হলে পরবর্তী যেকোন টাইপের ঋণ পেতে আপনার খুবই সমস্যা হবে। CIB হচ্ছে আপনাকে প্রদেয় ঋণের কৃতকর্মের পূর্ব ইতিহাস।